ফাত্তাহ মিসাইল কী এবং এটি যুদ্ধকে কীভাবে প্রভাবিত করছে?
ফাত্তাহ মিসাইল (Fattah Missile) ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) কর্তৃক নির্মিত একটি অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল। ২০২৩ সালে এটি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আনা হয়। ইরান দাবি করে, এটি একটি হাইপারসনিক মিসাইল—অর্থাৎ, এটি শব্দের চেয়ে ১৩ থেকে ১৫ গুণ বেশি গতিতে (মাচ ১৩-১৫) চলতে পারে। এই মিসাইলটি মাঝারি দূরত্বে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এবং আকাশপথে চলার সময় দিক পরিবর্তন করতে পারে, যা একে ইসরায়েলের বর্তমান মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।
প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য:
-
ফাত্তাহ একটি দুই-পর্যায় বিশিষ্ট, কঠিন জ্বালানী চালিত মিসাইল।
-
এর সর্বোচ্চ পাল্লা প্রায় ১,৪০০ কিলোমিটার, ফলে ইরান নিজ দেশ থেকেই ইসরায়েলের গভীরে আঘাত হানতে পারে।
-
মিসাইলটির বিশেষ নোজল এবং থ্রাস্ট ভেক্টর কন্ট্রোল প্রযুক্তি রয়েছে, যার ফলে এটি বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ও বাইরে চলার সময় সহজে দিক পরিবর্তন করতে পারে।
-
ইরান দাবি করে, এই মিসাইলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে থেকেও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে প্রভাব:
ফাত্তাহ মিসাইলের ব্যবহার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সামরিক ভারসাম্যে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। ইরান দাবি করেছে, এই মিসাইল ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (যেমন Iron Dome, David’s Sling) ভেদ করতে সক্ষম হয়েছে এবং সাম্প্রতিক হামলায় ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এই মিসাইলের গতি ও গতিশীলতা ইসরায়েলের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, কারণ প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এত দ্রুত ও দিক পরিবর্তনকারী মিসাইল আটকাতে পারে না। এর ফলে ইসরায়েলের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা আরও ঝুঁকির মুখে পড়েছে এবং পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েছে।
কৌশলগত ও আঞ্চলিক গুরুত্ব:
-
ফাত্তাহ মিসাইল ইরানকে বিশ্বে সীমিত কয়েকটি হাইপারসনিক মিসাইলধারী দেশের কাতারে তুলেছে।
-
এটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ভারসাম্য পরিবর্তন হয়েছে।
-
ইরান এই মিসাইলের মাধ্যমে নিজেদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখাতে চায়, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ায়।
ফাত্তাহ মিসাইল ইরানের সামরিক শক্তিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং ইসরায়েল-ইরান সংঘাতকে আরও জটিল ও বিপজ্জনক করে তুলেছে।